Saturday, 21 July 2012

পানকৌড়ি



পানকৌড়ি pankouri Indian cormorant
কাকের চেয়ে বড় কালো এই পাখিটি জলে ডুব দিয়ে মাছ ধরে বলে এদের ঠোট পা এবং লেজ হাঁসের মতো।
এর দুটো প্রজাতি বড় পানকৌড়ি ও ছোট পানকৌড়ি ।বড় পানকৌড়ি অপেক্ষাকৃত বিরল।
জলা জায়গার আশেপাশে এদের দেখা মিলবে। দল বেঁধে থাকে নদীতে, ঝিলে, হ্রদে। কুচকুচে কালো এদের গায়ের রঙ। এদের ঠোঁটের সামনের ভাগ বাঁকা। মাছ এদের প্রধান খাবার। মাঝে মধ্যে দলবদ্ধভাবে মাছ শিকার করে। প্রায়শই এদের গাছের ডালে বসে ডানা ছড়িয়ে রোদ পোহাতে দেখা যায়।বর্য়াকালে এরা গাছে কাকের মতো বাসা করে ডিম পাড়ে




(সব ছবি রানাঘাটের বাড়ী থেকে তোলা)

Sunday, 15 July 2012

কোকিল koel

কোকিল

কোকিল বাংলার একটি সুপরিচিত পাখি। এরা চমৎকার গান গেয়ে বসন্তকালকে মুখরিত করে তোলে। পরনির্ভরশীল পাখির কথা বললে প্রথমেই কোকিলের কথা আসে। কোকিল কখনও বাসা বাঁধে না। এরা অন্য পাখির বাসায় ডিম পাড়ে বিশেষ করে পাতিকাক, বুলবুলি, বাঘাটিকি, বনছাতারে এমনকি বসন্তবৌরির বাসায়ও ডিম পাড়ে। তবে পরজীবী পাখি হলেও বসন্তকালে এদের বিশেষ ডাকের কারণে সবার কাছেই পরিচিত এই পাখি।
কোকিলের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটার পর পরই অন্য ডিম বা বাচ্চা ফেলে দেয় বাসার মালিক পাখিরা। কালা কোকিল সবচেয়ে বেশি ডিম পাড়ে কাকের বাসায়। কোকিল ও কাকের ডিম পাড়ার সময় এপ্রিল-আগষ্ট মাসে। এ সময় কাকের ডিমে তা দেবার সময়। বাসার চারদিকে পুর"ষ কোকিল ঘুরঘুর করে কাককে রাগান্বিত করে। কাক কোকিলকে তাড়া করে আর সে এ সুযোগে মেয়ে কোকিল কাকের বাসায় ডিম পেড়ে আসে। কাক যেন টের না পায় সে জন্য তার কয়েকটি বা সবকটি ডিম ফেলে দিয়ে ডিম পাড়ে। অথবা কাক যখন সামান্য সময়ের জন্য বাসা ছেড়ে যায় তখনই কোকিল ডিম দেয়। বোকা কাক কিছু বুঝতে পারে না। সে নিজের ডিমের সঙ্গে কোকিলের ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা ফোটায়।


বাংলা ভাষায় কোকিল নিয়ে বেশ কিছু বাগধারা চালু আছে, যেমনকোকিলকন্ঠী মানে হল মধুর গানের গলা বিশিষ্ট, আবারবসন্তের কোকিল মানে হল সুসময়ের বন্ধু।


(ছবিতে এই কোকিলটার জন্ম এই কাকের বাসায়।মা কাকটি তার শিশু কোকিলটা এত বড় হবার পরও বুঝতে পারছে না যে এটি আসলে কোকিলের বাচ্চা।তাই এখনো খাইয়ে যাচ্ছে।)

নীলকন্ঠ বসন্তবৌরী

নীলকন্ঠ বসন্তবৌরী
ফলখেকো সুন্দর এই পাখিটি সব জায়গায়ই কম-বেশি দেখা যায়। একটু অভিজ্ঞ যারা, তারা না দেখেও ডাক শুনে চিনে ফেলতে পারে এদের। বাসা বাঁধার মওসুমে গাছের ডালে এক জায়গায় বসে তালে তালে ডাকে। কণ্ঠস্বর বেশ জোরাল। ডাকটা ‘কোটর টো কোটরো’ ধরনের। গলায় আশ্চর্য কারুকাজ খেলে। বেশি ডাকে বাসা-ডিম হওয়ার মওসুমে। এদের মাথা নীল আর সারা দেহ সবুজ। বসন্তকালে এই ণীলকন্ঠিদের বেশী দেখা যায় তাই এদের নাম নীলকণ্ঠ বসন্ত বৈরী।

মেয়ে ও পুরুষ পাখি মিলে গাছের মরা ডাল বা যুৎসই ডালে মাপমতো গর্ত খুঁড়ে বাসা করে। ডিম পাড়ে। ছানা ফোটায়। মূল খাদ্য এদের বিভিন্ন রকম ফল। খায় হা-ভাতের (নাকি হা-ফল?) মতো। বট-অশ্বত্থ-পাকুড়-বলা ফলই বেশি প্রিয়। তাল-খেজুরের রস পান করে। প্রয়োজনে পোকা-মাকড়ও খায়। চিবুক-গলা ও বুকের উপরিভাগ নীল। গলার দু’পাশে নীলের পাশে লাল ছোপ আছে। বুক-পেট ও লেজের নিচটা সবুজ। চোখ কালো, বৃত্ত কমলা। ডানা, পিঠ ও লেজের উপরিভাগ গাঢ় সবুজ। মাথা লাল, তার ওপরে কালচে রঙের একটি ব্যান্ড। কপাল ও মাথার পেছন দিকটাও লাল



সারা বসন্তকল জুড়ে পাখিটার ডাক শোনা যায় যদিও সচারচার চখে পড়ে না
তবে এটা একেববারেই বিলুপ্তপ্রায় নয়



এই video টা আমার তোলা


http://www.facebook.com/video/video.php?v=324972434217154

তিলি মুনিয়া

 তিলি মুনিয়া 
 (Scally-breasted Munia)। বৈজ্ঞানিক নাম Lonchura punctulata. এ দেশের শহর-বন্দর-গ্রামে প্রচুর দেখা যায়। লম্বায় ১১.৫ সেন্টিমিটার। মাথা থেকে লেজের ডগা জলপাই-বাদামি। চিবুক গাঢ় রঙের। বুকের ওপরটা খয়েরি। পেট কালচে-বাদামি, তাতে সাদা ফোঁটা থাকে। স্ত্রী-পুরুষ একই রকম।
মুনিয়া বেশ চঞ্চল। ফসলের খেত, মাঠ, নলখাগড়ার বন, বাগান প্রভৃতি স্থানে ঝাঁকে ঝাঁকে চরে বেড়ায়। এদের ঠোঁট খাটো ও বেশ শক্ত। ধান বা অন্যান্য শস্যদানা মুখে রেখেই তা থেকে শক্ত খোসা ছাড়িয়ে নিতে পারে। ঘাসবীচি ও কীটপতঙ্গও খায়।
মে-সেপ্টেম্বর প্রজননকাল। খেজুরগাছের পাতার আড়ালে, লতার ঝোপে, বাবলা, ঝাউ, কেয়া, কান্তা, দেবদারু প্রভৃতি গাছে গোলাকৃতির বাসা বোনে। ঘাস-লতা-ধানের পাতা দিয়ে সুন্দর, নরম ও তুলট বাসাটির ভিত্তি রচনা করে। কাশফুল দিয়ে চারপাশটা মুড়ে নেয়। বাসার ভেতরে থাকে কাশফুলের গদি। বাসায় ঢোকার জন্য গোপন সরু পথ বানায়, যেন শত্রুরা না দেখে। বশেমুরকৃবিতে বিল্ডিংয়ের কার্নিশের নিচে ও টোনারের খালি কার্টনে বাসা বানাতে দেখেছি। স্ত্রী মুনিয়া চার থেকে আটটি ধবধবে সাদা ডিম পাড়ে। স্বামী-স্ত্রী মিলে ১৩ থেকে ১৫ দিন তা দিয়ে বাচ্চা ফোটায়





(এই মুনিয়া পাখিটা তার সঙ্গীকে নিয়ে আমাদের ঘরের পাশে সুপুরি গাছে বাসা বানাচ্ছে আর সারাদিন ধরে এদের কর্মতৎপরতা দেখা একটা সুন্দর অভিজ্ঞতা)